শাহরাস্তিতে বন্যায় মৎস্য খাতে ১২৫ কোটি ও কৃষিতে ৭ কোটি টাকার ক্ষতি

স্টাফ রিপোর্টার : শাহরাস্তিতে চলমান বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হওয়ায় সাথে সাথে ক্ষতচিহ্ন দৃশ্যমান হচ্ছে। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি সহ নানা ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য ভেসে উঠছে। এখনো সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পায়নি শাহরাস্তিবাসী। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। গত দুদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেলেও অনেকেই এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করতে দেখা গেছে। যে সকল পরিবার আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছে তাদের নানান দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রাখা হলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনগুলোর ত্রাণ তৎপরতা কমে এসেছে। বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে ইতোমধ্যে অনেকেই উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চূড়ান্ত করতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। ইতোমধ্যে মৎস্য ও কৃষি অধিদপ্তর থেকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এখনো সড়কের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চূড়ান্ত করতে পারেনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।

এবারের বন্যায় শাহরাস্তি উপজেলায় সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে মৎস্য খামারিরা । উপজেলার বেশিরভাগ মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শত চেষ্টা করেও মাছ রক্ষা করতে পারনি ব্যবসায়ীরা। এতে করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অনেকেই জানান, এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বেশ কয়েক বছর যুদ্ধ করতে হবে তাদের। যারা ঋণ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন তাদের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ । শাহরাস্তিতে চলমান বন্যায় শুধু মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ ১ শত ২৫ কোটি টাকা। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর, দিঘি ও খামারের সংখ্যা ৫ হাজার ৫০০ টি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌসিফ উদ্দিন জানান, এখনো ক্ষয়ক্ষতির তালিকা নিয়ে অনেকেই আবেদন করছেন, এ তালিকা আরো বাড়তে পারে। আমরা তালিকা চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি। সরকারের সিদ্ধান্ত পেলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হবে।

অপরদিকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চূড়ান্ত করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আয়শা আক্তার জানান, বন্যায় কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি টাকা। ৩ হাজার ৮ শত ৫৫ জন কৃষক এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম জানান, বন্যায় উপজেলায় ১৬ শ’ নলকূপ অকেজো হয়ে গেছে। এছাড়াও ১২ শ’ শৌচাগার নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১৮ কোটি টাকার বেশি। এছাড়াও উপজেলার গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনো তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

Related posts

Leave a Comment